আজ মঙ্গলবার, ১৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ইরানের প্রেসিডেন্ট নিহত

অনলাইন ডেস্ক:

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির গণমাধ্যম ইরনা ইন্টারন্যাশন্যাল। হেলিকপ্টারে রাইসির সঙ্গে থাকা ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির-আব্দুল্লাহিয়ান ও তাদের সফরসঙ্গী সবাই নিহত হয়েছেন। এছাড়াও তাদের মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত করেছে সাবেরিন নিউজ।
এদিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে নিয়ে দুর্ঘটনা কবলিত হেলিকপ্টারটির খোঁজ পাওয়ার পর রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে ওই হেলিকপ্টারে কেউই জীবিত থাকার লক্ষণ নেই।
ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি বলছে, প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার মুখে পড়ার পর সেখানে কারও জীবিত থাকার ‘কোনও চিহ্ন’ নেই বলে ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি বলছে। অন্যদিকে ইরানের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স আরও জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় হেলিকপ্টারটি ‘সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে’।
এদিকে ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরআইএনএন এবং আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা মেহর নিউজ জানিয়েছে, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটির দুর্ঘটনাস্থলে ‘কোনও জীবিত ব্যক্তি’ পাওয়া যায়নি।
গতকাল আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় দুই দেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে যান ইব্রাহিম রাইসি। সেখানে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভও ছিলেন। সেখান থেকে তিনটি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন ইব্রাহিম রাইসি ও তার সঙ্গে থাকা অন্য কর্মকর্তারা।

পথে পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে দুর্গম পাহাড়ে প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। অন্য দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছায়।

হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিসহ অন্যদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে দিয়ে হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় অনুসন্ধান অভিযানও শেষ হয়েছে। ইরানি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি আজ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে।

ইরানি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রধান পীর হোসেইন কোলিভান্দ দেশটির রাষ্ট্রীয় টিভিকে বলেন, শহীদ হওয়া ব্যক্তিদের মরদেহ ইরানের উত্তর-পশ্চিমের তাবরিজ শহরে স্থানান্তর করার প্রক্রিয়া চলছে।

তাবরিজ শহরটি ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী। এই প্রদেশেই দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়।

ইরানের সংবাদমাধ্যম তাসনিম জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি’র জানাজা  মঙ্গলবার তাবরিজে অনুষ্ঠিত হবে।

ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, দেশটির প্রেসিডেন্ট এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি ছিল বেল ২১২। কপ্টারটি বয়স সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে, এই মডেলটি কানাডার সামরিক বাহিনীর জন্য ১৯৬০ সালে তৈরি করা হয়েছিল।

ইরানের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত বার্তা সংস্থা জানায়, প্রেসিডেন্টকে বহনকারী কপ্টারে ছয় জন যাত্রী এবং তিনজন ক্রু ছিলেন।

ফ্লাইট সেফটি ফাউন্ডেশন নামে একটি অলাভজনক সংস্থার মতে, বেল ২১২ – এর সর্বশেষ মারাত্মক দুর্ঘটনাটি ঘটে ২০২৩ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। দেশটির উপকূলে উড্ডয়নের সময় বিধ্বস্ত হয় ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি হেলিকপ্টার।

ইরানে এর আগে ২০১৮ সালে সর্বশেষ একটি বেল ২১২ দুর্ঘটনায় শিকার হয়। একজন হার্ট অ্যাটাকের রোগীকে উদ্ধারে কাজ করছিল এটি।